মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫, ০৭:৫১ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রতি বছরের ন্যায় বাংলার ঐতিহ্য ধারণ করে পহেলা বৈশাখে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানমালা অনুষ্ঠিত হয়। দোহার-নবাবগঞ্জের প্রশাসন অনাড়ম্বর পরিবেশে আনন্দ শোভাযাত্রা ও তিন দিন ব্যাপী বৈশাখী মেলার আয়োজন করেছে। সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো তাঁদের উৎসবের আয়োজন করে। কোথাও বসেছে গ্রাম্য মেলা। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বর্ষবরণের শোভাযাত্রা করেছে।
সোমবার(১৪ এপ্রিল) সকাল ১০ টায় নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রথমে তাঁদের ক্যাম্পাসে জাতীয় সংগীত ও বর্ষবরণ সংগীত পরিবেশেন করে। পরে বর্ষবরণের শোভাযাত্রা বের করে। শোভাযাত্রাটি উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদমিনারে গিয়ে শেষ হয়। এতে নেতৃত্ব দেন নবাবগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা দিলরুবা ইসলাম।
এরপর শহীদমিনার চত্বরে তিন দিন ব্যাপী বৈশাখী মেলার উদ্বোধন করা হয়। মেলায় দেশীয় তৈরী নানা জিনিসের স্টল বসেছে। বাঙ্গালীয়ানায় ভরপুর পুরোটাই বাংলা ঐতিহ্যের সাক্ষ্য বহন করছে। নানা বয়সী ছেলে মেয়েরা নেচে গেয়ে পহেলা বৈশাখকে বরণ করে।
এসময় নবাবগঞ্জ ললিতকলা একাডেমী(নাফা)’র আয়োজনে নৃত্য, বাউল সংগীত ও কাচনৃত্য পরিবেশন করা হয়। বৈশাখী আলপনায় আঁকা নানা বৈচিত্রের পোষাক ও ফেষ্টুন নিয়ে বর্ষবরণ শোভাযাত্রায় অংশ নেয় কাচনৃত্যের দল। এসময় রাজনৈতিক সামাজিক , সাংস্কৃতিকসহ নানা শ্রেণী পেশার বিপুল সংখ্যক মানুষ শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করে।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী বক্তব্যে ইউএনও দিলরুবা ইসলাম বলেন, বাংলা সংস্কৃতির ঐতিহ্য পহেলা বৈশাখ আমাদের মনে উচ্ছাসের জাগরণ তৈরী করে। সকল হিংসা বিদ্বেষ ভুলে গ্রামবাংলার মানুষের মাটির যে অবায়ব সেটা প্রতিষ্ঠা করাই হোক আমাদের বর্ষবরণের মূল চেতনা। আসুন অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বাংলার সংস্কৃতি ধরে রাখতে শপথে সামিল হই। সকল অপশক্তির বিনাশ ঘটিয়ে সত্য ও ন্যায়কে প্রতিষ্ঠায় সামাজিক বন্ধন অটুট রাখতে এগিয়ে যাই।
এসময় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিথি ও শিল্পীদের আপ্যায়নে অনুষ্ঠানের নতুন মাত্রা হিসেবে খৈ, মুড়ি, নিমকি, মুরলী, তিলের সন্দেশসহ বিভিন্ন খাবার পরিবেশন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলেজ অধ্যক্ষ সদানন্দ মধু, বিএনপির ঢাকা জেলা সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক, দোহার সার্কেলের জেষ্ঠ্য সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুল আলম, নবাবগঞ্জ থানার ওসি মমিনুল ইসলাম, নবাবগঞ্জ থিয়েটারের পক্ষে এরশাদ আল মামুন, গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা মিজান মোল্লা, জাতীয় পার্টি, উপজেলা সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান, সাংস্কৃুতিক ব্যক্তিত্ব শফিউর রহমান তোতা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন তুলি শায়মা রহমান।
এদিকে পহেলা বৈশাখের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান করে দোহার-নবাবগঞ্জ কলেজ। কলেজ বটমূলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। নবাবগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে ললিত কলা একাডেমী “মাটির সংস্কৃতি ধরে রাখবো আমরা, ছড়িয়ে দিবো সারা বিশ্বে’ এই শ্লোগানে বিকেলে নৃত্য সংগীত, অঙ্কন প্রতিয়োগিতা ও আবৃতির আয়োজন করা হয়। এছাড়া বৈশাখ পালন করতে তুইতাল বকচর, হরিশক‚ল, চুড়াইন, মেলেং, কারশুর ও চন্দ্রখোলায় বসেছে গ্রাম্য মেলা।
অপরদিকে দোহার উপজেলার জয়পাড়া কলেজ মাঠে দিনব্যাপী সংগীত, নৃত্য আবৃতিসহ নানা অনুষ্ঠান চলে। সেখানেও তিন দিনব্যাপী উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বসেছে মেলা। মেলার উদ্বোধন করেন দোহার উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা(ইউএনও) তানিয়া তাবাসসুম।